ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১৩/১০/২০২৫ ১২:৪৬ পিএম

সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা অঞ্চলে বিশাল এক সোনার খনি আবিষ্কৃত হয়েছে। প্রায় ১২৫ কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত এই খনিজভাণ্ডারকে দেশটির ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ আবিষ্কার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। মানসুরা–মাসারাহ সোনার খনির দক্ষিণে পাওয়া এই নতুন স্বর্ণভাণ্ডার ইতোমধ্যেই সৌদি অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। খবর—দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।

রাষ্ট্রীয় খনিজ কোম্পানি ‘মাআদেন’ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে প্রায় ১০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে উচ্চমাত্রার সোনার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষাগারে নেওয়া নমুনায় প্রতি টন মাটিতে সর্বোচ্চ ২০ দশমিক ৬ গ্রাম পর্যন্ত সোনা পাওয়া গেছে, যা আন্তর্জাতিক মানে ‘অত্যন্ত সমৃদ্ধ’ হিসেবে ধরা হয়।

মাআদেনের প্রধান নির্বাহী রবার্ট উইলে বলেন, “এই নতুন আবিষ্কার মক্কাকে বৈশ্বিক সোনার মানচিত্রে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এটি শুধু অর্থনৈতিক নয়, প্রযুক্তিগত দিক থেকেও এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।”

বর্তমানে মানসুরা–মাসারাহ খনিতে প্রায় ৭০ লাখ আউন্স সোনা মজুত আছে এবং প্রতিবছর এখান থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার আউন্স সোনা উত্তোলন করা হয়। নতুন আবিষ্কারের ফলে উৎপাদন বহুগুণে বাড়বে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, পুরো অঞ্চলজুড়ে ১২৫ কিলোমিটারব্যাপী এক ‘গ্লোবাল গোল্ড বেল্ট’ বা আন্তর্জাতিক স্বর্ণপট্টি গড়ে উঠতে পারে।

এই সোনার খনি আবিষ্কার সৌদি আরবের ‘ভিশন ২০৩০’ উদ্যোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। দেশটি তেলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে খনিজ, প্রযুক্তি ও শিল্পখাতকে অর্থনীতির নতুন চালিকাশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে।

সৌদি শিল্প ও খনিজসম্পদমন্ত্রী বান্দার আলখোরাইফ বলেন, “আমাদের খনিজ খাত এখন বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল সেক্টরগুলোর একটি। এই নতুন সোনার খনি আবিষ্কার সৌদি অর্থনীতির বৈচিত্র্যকরণের যাত্রায় ঐতিহাসিক মাইলফলক হয়ে থাকবে।”

এছাড়া, মাআদেন জানিয়েছে যে ওয়াদি আল-জাও ও জাবাল শাইবান অঞ্চলেও নতুন সোনা ও তামার ভাণ্ডার পাওয়া গেছে, যা ভবিষ্যতে বড় আকারের খনন কার্যক্রমের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, এই নতুন খনি হাজার হাজার কর্মসংস্থান তৈরি করবে এবং বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে। এতে সৌদি আরব আন্তর্জাতিক স্বর্ণবাজারে আরও শক্তিশালী অবস্থান নিতে পারবে।

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি স্বর্ণমজুত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে (৮,১৩৩.৫ টন)। এরপর রয়েছে জার্মানি (৩,৩৫১ টন), ইতালি (২,৪৫১.৮ টন), ফ্রান্স (২,৪৩৭ টন) এবং রাশিয়া (২,৩৩২.৭ টন)। বিশ্লেষকদের ধারণা, সৌদি আরবের এই নতুন স্বর্ণভাণ্ডার বৈশ্বিক স্বর্ণবাজারে নতুন প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করবে এবং আন্তর্জাতিক দামে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন আন্তর্জাতিক তহবিল তোলার দাবি যুক্তরাষ্ট্রের

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য নতুন আন্তর্জাতিক তহবিলের দাবি তুলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ...

গাজায় দলে দলে বাড়ি ফিরছে মানুষ

ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় ...

কাতারের প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইলেন নেতানিয়াহু

কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল-থানির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ...